এস এম মাহবুবুর রহমান : পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক তেরখাদা উপজেলার পাতলা চরকুশলা খাল খননে এলজিইডি’র রাস্তাসহ স্থানীয় কয়েকশ পরিবারের বসত ভিটা, বাড়ী-ঘর, গাছপালা, মন্দির, পানের বরজসহ কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে পাতলা ও চোমরা গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অেিভযোগ করেছেন। একই সাথে এলজিইডি’র রাস্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়ে আবেদন করেছেন উপজেলা প্রকৌশলী। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরজমিন পরিদর্শনপূর্বক খনন কাজ বন্দ রাখলেও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নানা কৌশলে কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর এলাকাবাসীর দাখিলকৃত লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, স্থানীয় ৪ নং সাচিয়াদাহ ইউপি চেয়ারম্যান লস্কর উদ্দীন পাতলা ও চোমরা গ্রামের মধ্য হতে প্রবাহমান খালটি খননের কাজ করাচ্ছেন। খালটি পূর্বের সীমানা জুড়ে না করে নিয়ম বহির্ভুতভাবে পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদের রেকর্ডভুক্ত জমির উপর দিয়ে কাটানো হচ্ছে। খাল খননের ফলে ইতোমধ্যে খালের দু’পাশের সরকারি সড়কের মধ্যে একটি সড়ক বিলিন হয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দা বিধান বালা, রঞ্জন বালা, কৃষ্ণ বালা, লিটন বালা, মতিলাল ব্যাপারী, আরাধন রায়, প্রভাষ বালা, বিপংকার বালা, নিবু বালা, দশু বালা, ফনি বালা, রবিন বালা, দশরত বালা, অরুন বিশ্বাস, নঠবার বিশ্বাস, দেবরত বিশ্বাস, আশিক বিশ্বাস, শ্রিদাম বিশ্বাস, সনাতন বিশ্বাস, সুভাষ দে, অনিল কৃষ্ণ দেব, মিহির মন্ডল, শম্ভু সরকার, নবির শেখ, আকাশ শেখ, আশারফ লস্কারসহ শতাধীক ব্যক্তি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এদের বাড়ী ঘর, গাছপালা, মন্দির, পানের বরজ সহ কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বহু পরিবারের বসত ঘর, ভিটে-বাড়ি, পানের বরজ, মন্দিরসহ রেকর্ডীয় সম্পত্তি খালের মধ্যে চলে গিয়ে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে গত ১১ ডিসেম্বর তেরখাদা উপজেলা প্রকৌশলী (অঃদাঃ) মো. শহিদুল ইসলাম এলজিইডি’র সড়ক রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেন। ওই আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, উপজেলাধীন এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত পাতলা শ্রীপদ মেম্বর হাউজ হতে পাতলা বাজার অভিমুখি এইচবিবি রাস্তার স্লোল্ডারসহ সম্পুর্ণ স্লোপ এক্সকাভেটর দ্বারা হচ্ছে। পাতলা খালটি ডিজাইন বহির্ভূতভাবে স্লোপে মাটি না কেটে খাড়াভাবে কাটা হচ্ছে। ফলে রাস্তাটির স্লোপসহ অর্ধেক খালের গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। পার্শ্ববর্তী আর একটি রাস্তা পাতলা-কড়রিয়া-ইন্দুরহাটি এফআরবি পাকা রাস্তাটি ঝুঁকির সম্মূখীন। যে কোন সময় রাস্তাটি খালের গর্ভে বিলিন হয়ে যেতে পারে।
এব্যাপারে ওই এলাকার বাসিন্দা বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা প্রফুল্ল কুমার মরু ঢালি বলেন, এলাকার গরীব মানুষের বাড়ি-ঘর ও বিষয়-সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে অপরিকল্পিতভাবে খাল খনন করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ক্ষতিপূরণ না দিয়ে খাল খনন অব্যাহত রাখলে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে। তাই তিনি সকল প্রকার ক্ষতি এড়িয়ে খাল খননের দাবি জানান।
No comments:
Post a Comment