Channel Atv

সময়ের সাথে এগিয়ে চলে সাহসের সাথে কথা বলে

আসুন নিজেকে বদলায়। প্রতিদিন একটি ভালো কাজ করি। সুন্দর জীবন ও সমাজ গড়ি। নতুন সকাল

Breaking

Tuesday, October 30, 2018

খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর কারাদণ্ড

ঢাকা অফিস : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে  নিন্ম  আদালতের দেওয়া পাঁচ বছরের  সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সাজা বাড়াতে দুদকের আবেদন গ্রহণ করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে ৫ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আপিল খারিজ করে দেন আদালত। এ ছাড়া ১০ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে মাগুরার প্রক্তান সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে কাজী কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের আপিল খারিজ করেন আদালত।

রায় ঘোষণার সময় আদালত বলেন, আমরা শুধু রায়ের অপারেটিং (কার্যকর) অংশটুকু ঘোষণা করছি। এরপর আদালত তিন আসামির আপিল খারিজ করেন। আর সাজা বাড়াতে দুদকের রুল যথাযথ ঘোষণা করে খালেদার জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর কারাদণ্ড দেন।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও মোমতাজ উদ্দিন ফকির। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশিদ আলম খান। তবে রায় ঘোষণার সময় খালেদা জিয়ার কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।

এর আগে গতকাল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে করা আপিল ও সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের আপিলের শুনানি সমাপ্ত ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এদিনও খালেদা জিয়ার পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে ওই দিন  নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিনজন কারাবন্দী। বাকি তিন আসামি পলাতক। খালেদা জিয়া ছাড়া বাকি দুজন হলেন- মাগুরার প্রাক্তন সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।

পলাতক তিনজন হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, প্রাক্তন মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। পরে খালেদা জিয়া ৫ বছরের সাজা থেকে খালাস চেয়ে  হাইকোর্টে আপিল করেন। পাশাপাশি সাজা বৃদ্ধি চেয়ে রিভিশন আবেদন করেন দুনীর্তি দমন কমিশন।

 চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার ৭ বছর কারাদণ্ড 

এর আগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চার আসামিকে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরো ছয় মাস কারাভোগ করতে হবে।

সোমবার দুপুর পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে কেনা কাকরাইলের ৪২ কাঠা জমি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রায়ে।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন-বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী ও তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রাক্তন মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। আসামিদের মধ্যে জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান কারাগারে আছেন। রায় ঘোষণাকালে তাদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। খালেদা জিয়া এ মামলায় জামিনে আছেন। অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তবে অসুস্থ থাকায় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ কারণে তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

দুর্নীতির দায়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় আর খালেদা জিয়াকে দুর্নীতিতে সহযোগিতা করার দায়ে অপর তিন আসামিকে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় একই সাজার আদেশ দেন বিচারক।

এদিকে রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, আসামি খালেদা জিয়া রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত ট্রাস্টের মূলে অবৈধভাবে অর্থ সংগ্রহ করেছেন এবং সেটা ব্যয় করেছেন। এটা কাম্য হতে পারে না। পরবর্তীতে কেউ যাতে এরকম কাজে উৎসাহিত না হন, সেজন্য তাকে (খালেদা জিয়া) কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার বলে আদালত মনে করে। একইভাবে তাকে সহযোগিতা করার জন্য অপর আসামিদের কঠোর সাজা হওয়া দরকার বলে আদালত মনে করে।

এর আগে বিচারক তার ছয় শতাধিক পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্তসার প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সময় নিয়ে আদালতে পড়ে শোনান। ১৫টি বিষয় বিবেচনা করে তিনি আসামিদের সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করেন।রায়ে সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। তবে এদিন খালেদা জিয়ার কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। 

গত ৩০ জানুয়ারি মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ চার আসামির সর্বোচ্চ সাজা ৭ বছরের কারাদণ্ড চায় রাষ্ট্রপক্ষ। এর আগে আদালত বিভিন্ন সময়ে ৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি একই আদালত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় চার্জ গঠন করেন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here

আজকের ভোরের ডাক পড়ুন এখানে