Channel Atv

সময়ের সাথে এগিয়ে চলে সাহসের সাথে কথা বলে

আসুন নিজেকে বদলায়। প্রতিদিন একটি ভালো কাজ করি। সুন্দর জীবন ও সমাজ গড়ি। নতুন সকাল

Breaking

Tuesday, November 13, 2018

নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দাবিতে খুলনায় বিএনপির প্রেস ব্রিফিং

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, ঐক্যফ্রন্ট সাতদফা দাবিকে সামনে রেখে কর্মসূচি গ্রহণ ও পালন করেছে। পরে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নেতা-কর্মীরা ব্যাথা-বেদনার মধ্যে আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঐক্য ফ্রন্টের নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় কারাগারে রয়েছে। আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে পাশে চেয়েছিলাম। ঐক্যফ্রন্টের সাতদফা দাবির মধ্যে প্রথম ছিল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি। দেশনেত্রীকে আমাদের পাশে পেতে চায়।  সিটি মেয়র নির্বাচনেও লেভেল প্লেয়িং নির্বাচনের জন্য ৯ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। সকলেই যানে সেই নির্বাচন কেমন হয়েছে। আমাদের সেই শঙ্কা এখনও কাটেনি। নতুন করে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি অর্থবহ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচনের জন্য আমরা সোমবার থেকে কাজ শুরু করেছি। 
নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে নগর বিএনপি আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। 
তিনি রিটার্নিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, খুলনায় একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ রচনা করতে হবে। এটি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দেয়া বক্তব্য অনুযায়ী আমরা বাস্তবায়ন চাই। যেহেতু ছয় মাস পূর্বের একটি ভোট ডাকাতির ক্ষত আমাদের মধ্যে আছে, বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচালে আমরা আছি। কারণ সেই নির্বাচনী কর্মকর্তা, সেই নির্বাচন কমিশন, সেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সেই প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিশ অফিসার আবার নতুন করে এই নির্বাচনে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বলে আমাদের কাছে সংবাদ আছে। আমরা মনে করি পরিস্থিতি যদি এমনই হয়, তাহলে খুলনায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার কোন পথ আমাদের আর খোলা থাকবে না। সোমবার মহাসচিব বলেছেন যদি অবস্থার পরিবর্তন না হয় তাহলে বিএনপি ভিন্ন পন্থা অবলম্বনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। আমরা এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলকে বিজয়ী করে ক্ষমতায় রাখার জন্য নয়। আমরা অংশ নিয়েছি ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, জনগন তার ভোটের অধিকার ফিরে পাবে। একটি অর্থবহ নির্বাচন হবে এবং গণতন্ত্রের সংকট মোচন হবে। দেশে একটি শান্তি হাওয়া বইবে এবং জনগণের মধ্যে স্বস্তি আসবে। সে কারণেই বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দল যৌথভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই নির্বাচনে অন্তরায় হচ্ছে এখানে কিন্তু ভ্রাতুস্পুত্র নির্বাচনে অংশ নেবে বলে শুনতে পারছি এবং প্যানায়ও আমরা তাই দেখেছি। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা যখন নির্বাচনে নামে তখন শঙ্কা দূর হয় না। গতবার মেয়র নির্বাচনে ভ্রাতুস্পুত্ররাই প্রথমেই ঘোষণা দিয়েছিলো খুলনার নির্বাচিত মেয়রকে শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে হবে। উপহার তারা দিয়েছেন দলিত, পতিত করে নির্বাচনের সমস্ত আচরণ ভেঙ্গে চুর চূরমার করে তারা কিন্তু বিজয়ী হয়েছেন ভোট ডাকাতির মাধ্যমে। আমাদের শঙ্কা এই আসন সহ বাংলাদেশের বেশকিছু আসন স্পর্শকাতর হয়ে দাড়াবে। এখন থেকে যদি যাত্রা শুরু ভালো না হয়, তবে ভবিষ্যতে যাত্রা সফল হবে না। তিনি রিটানিং অফিসারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। তিনি  প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, আমরা দাবি করবো একজন নির্বাচন কমিশনারকে এই বিভাগের হেড কোয়াটারে রেখে এই বিভাগের নির্বাচনের তদারকি করার দাবি জানিয়েছেন। বিএনপির ১৫৯ জন নেতাকর্মী কারাগারে। ১৮টি গায়েবী মামলায় ৩ হাজার নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। নগর ও জেলার সাড়ে ৩ হাজার নেতাকর্মীকে বাহিরে রেখে নির্বাচনে যেতে চায় না। কারাগারে আটক সকল নেতাকর্মীদের মুক্ত করার দাবি জানান তিনি। নির্বাচনী তফসিল এক সপ্তাহ পিছিয়েছেন। আশা করেছিলাম নির্বাচন কমিশন তিন সপ্তাহ পেছাবেন। এই জন্য পেছাবে এক বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী হেলিকাপ্টারে করে নৌকার ভোট চেয়েছেন সারাদেশে। আ’লীগ গত তিন মাস আগে থেকে ওয়ার্ড, থানা পর্যায়ে তাদের পুলিং এজেন্ট, তারা সেন্ট্রাল কমিটি ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করেছে। আর আমরা তখন কারাগারে ছিলাম এবং পালিয়ে বেরিয়েছি। গতকাল পর্যন্ত বিএনপি কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। ১০ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন বার্তা দিয়েছে প্রশাসনকে গ্রেফতার অভিযান না হয়। কিন্তু এই গ্রেফতার অভিযান খুলনায় এখনও থামে নাই। গতকাল রাত পর্যন্ত গ্রেফতার অভিযান চলেছে। গতকাল ১৬নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সোহেলকে বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। পুলিশকে জানালে তারা অস্বীকার করে। পরে দেখেছি ডিবি একজন মাদক বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে আমাদের সোহেলকে সেই সাথে চালান করেছে। তার মানে আইনশৃঙ্খলার মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা সরকার দলীয় সমর্থকরা এখনও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে। সোহেলের পরিবারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নেয়া হয়, পরবর্তীতে আমি জেনে যাওয়া টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। এই ঘটনার তদন্ত করে সত্যতা চাই। এছাড়া দৌলতপুরে বিএনপি নেতা আতিয়ারের বাড়িতে তল্লাশী ও অশোভন আচরণ করা হয়েছে। এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। 
তিনি বলেন, এখনও নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলছে। সরকার প্রধান গতকালও বিভিন্ন প্রকল্প  পাশ করেছেন। খুলনায় মিছিল, মটরসাইকেল মহড়া, মাইকিং করা হচ্ছে বিভিন্ন ওয়ার্ডে মাইকিং করে বলা হচ্ছে বিএনপির কোন নেতাকর্মীদেরকে ঘর থেকে বের হতে দেয়া হবে না। খুলনা শহরের ৫টি প্রবেশদ্বারে সীল করে দেয়া উচিৎ। চেকিং পয়েন্ট করে বহিরাগতদের খুলনায় প্রবেশ করতে না দেয়ার দাবি জানান। মহড়া বন্ধ করতে হবে। পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরতে কার্পন্য করে না কিন্তু সরকারি দল নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তাদের বাধা দেয়ার কোন ইচ্ছা নেই। পুলিশ রাষ্ট্রীয় সম্পদ। এই সম্পদকে সরকার এমন জায়গায় নিয়েছে জনগণের আস্থা হারিয়েছে। সিটি মেয়র নির্বাচনে পুলিশ কর্মকর্তারা ব্যালট কেটে ভোট দিয়েছেন সেই তথ্য আছে, পুলিশ কমিশনারের কাছে সেই তালিকা দেব ও স্মারকলিপি দেব। সৎ সাহসী ও পেশাদার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়ার আহ্বান জানাবো। নির্বাচন কমিশনের ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এই কর্মকর্তাদের যাচাই-বাছাই করতে হবে। পুলিশ খোজে বিএনপি করে কিনা, পুলিশ খোজে না আ’লীগ করে কিনা। যেই হোক তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সিটি নির্বাচনে বিএনপি দুই ঘন্টায় ১ লাখ ৯ হাজার ভোট পেয়েছে। আরো সময় পেলে কি অবস্থা হতো। কিভাবে ভোট ডাকাতি হয়েছে দেখেছে সকলে। আপত্তি জানিয়েছিলাম। কাজ হয়নি। বিভিন্ন রেস্ট হাউজে খুলনার বাহিরের ব্যক্তিদের চেক করতে হবে। বহিরাগতদের দিয়ে সিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করা হয়। নির্বাচনে এসমস্ত ভোট ডাকাত ও দস্যুদের চিহ্নিত করতে হবে। বিএনপির পুলিং এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশী চালিয়েছে পুলিশ। এবার এতো সহজ হবে না। ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিএনপি ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। ভোট রক্ষা ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য ভোটারদের ভূমিকা নিতে হবে। ভোট ডাকাতি হচ্ছে কিনা সেটি পাহাড়া দেয়ার জন্য আপনারা থাকবেন আমরা পাশে থাকবো।
তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন একটু ভিন্ন ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচন বিশ্ববাসী দেখবে। এবং এই নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয় সরকারের জন্য সুখকর হবে না। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে মানে এই নয়, যে বিএনপি আপনাদের সব ধরনের সুস্কর্ম মেনে নিয়ে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করবে। এবার পরিস্থিতি কিন্তু পাল্টে যাবে, সেই পরিস্থিতি কিন্তু বিদ্যমান। জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে। আমরা ইভিএম চাই না। বিতর্কিত ইভিএম আমরা চাই না। 
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও কেসিসির সাবেক মেয়র মোঃ মনিরুজ্জামান মনি, মীর কায়ছেদ আলী, সেকেন্দার জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, মোল্লা আবুল কাশেম, সৈয়দা রেহেনা ঈসা, শাহজামাল বাবলু, স ম রহমান, শেখ ইকবাল হোসেন, ফকরুল আলম, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, শেখ আমজাদ হোসেন, আরিফুজ্জামান অপু, সিরাজুল হক নান্নু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মেহেদী হাসান দিপু, মহিবুজ্জামান কচি, শফিকুল আলম তুহিন, আজিজুল হাসান দুলু, ইকবাল হোসেন খোকন, শেখ সাদী, ইউসুফ হারুন মজনু, সাজ্জাদ হোসেন তোতন, মুর্শিদ কামাল, মাসুদ পারভেজ বাবু, একরামুল কবীর মিল্টন, একরামুল হক হেলাল, হাসানুর রশীদ মিরাজ, শামসুজ্জামান চঞ্চল, মাহবুব হাসান পিয়ারু, নাজমুল হুদা সাগর, শরিফুল ইসলাম বাবু, হেলাল আহম্মেদ সুমন প্রমুখ। এছাড়া বিএনপির থানা ওয়ার্ড ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here

আজকের ভোরের ডাক পড়ুন এখানে