Channel Atv

সময়ের সাথে এগিয়ে চলে সাহসের সাথে কথা বলে

আসুন নিজেকে বদলায়। প্রতিদিন একটি ভালো কাজ করি। সুন্দর জীবন ও সমাজ গড়ি। নতুন সকাল

Breaking

Sunday, November 4, 2018

খুলনা মহানগর বিএনপির প্রেস ব্রিফিং

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতি সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, দেশ একটা সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। গণতন্ত্রের এই সঙ্কট থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে গঠিত হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপি যে কথাটি গত সাড়ে ৯ বছর বলেছে সেটি হচ্ছে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা। জাতীয় সংলাপের কথা। গণতন্ত্রের সংকট থেকে দেশকে বেরিয়ে আনার কথা। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার। আমরা আশান্বিত জাতির সেই আশা পূরণ হতে যাচ্ছে। সেই জন্যে অর্থবহ সংলাপের কথা বিএনপি বলেছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বলেছে। আমরা এখনো আশান্বিত সংলাপকে মেনেই সংলাপের মধ্যদিয়ে সমাধান বেরিয়ে আসবে। আর তা যদি সমাধান না আসে তাহলে সংকট আরো ঘনিভূত হবে। সংকট বাড়বে, নিপীড়ন, অত্যাচার বাড়বে এবং অর্থবহ নির্বাচন না হলে আরো বেশি ক্ষতির সময় আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে। তিনি বলেন, একদিকে প্রধানমন্ত্রী সংলাপে করছেন। বলছেন আপনাদের বিরুদ্ধে যে মামলা তার একটি তালিকা দেন, আমরা গতকাল একটি তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছি। একদিকে তালিকা চেয়ে পাঠানো আরেকদিকে প্রতিহিংসার রাজনীতির এই ভয়ালরূপ কেন ? দেশ কে চালাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী না অন্য কেউ এই প্রশ্ন আমাদের। যে দিন সংলাপ চলছিলো সেই সংলাপের রাতেই খুলনায় দুইটি গায়েবী মামলা। তাহলে কি সরকার আমাদের সাথে অভিয়ন করছেন?
রোববার বেলা ১২ টায় কেডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে মহানগর বিএনপি আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 
পুলিশের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিএনপি একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। এই দলের রাজনীতি করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। এই দল নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন দল নয়। আপনারা কেন আমাদের রাজনীতি করতে দিবেন না। বাড়িতে ঘুমাতে দেবেন না, কেন অফিসে আসতে দেবেন না, কেন ধরে নিয়ে নিপীড়ন করবেন। সরকারকে বলতে চাই আইনশঙ্খলা বাহিনী কার আদেশবলে কাজ করছে। তারমানে কি সরকারের মধ্যে সরকার আছে, পরিবার আছে, সরকারের মধ্যে ভ্রাতুষ্পুত্র আছে ? যাদের ইঙ্গিতে এই কাজগুলো হচ্ছে। এটি একটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। গত সিটি নির্বাচনে খুলনা মডেলের ভোট ডাকাতির, যে সন্ত্রাসের চেহারা, ভয়াবহ রূপ দেখেছি এই সেই রূপকে আবার সরকার হাজির করেছে। বলেছিলাম আমরা নির্বাচনের ময়দান থেকে যাবো না। আমরা শেষদিন পর্যন্ত তাদের চেহারা দেশবাসী এবং বিশ্ববাসীকে দেখানোর চেষ্টা করেছি। সে সময়ে ২৫০-৩০০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিং এজেন্টদের আটকে রাখা হয়েছে, বাড়ি থেকে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে, দাবড়ানো হয়েছে। সেই চেহারা আবার দেখতে পারছি। এ জন্য বিশ্বাস হয় না শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন কখনো হতে পারে। আর তাইতো বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট দিয়েছে সাত দফা। একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ সরকারের যে কি প্রয়োজন এটি দেশবাসী এবং আমরা অনূভব করতে পারছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল, সবচেয়ে জনপ্রিয় দলের প্রধানকে কারাগারে রেখে, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে সেই নির্বাচন হতে পারে না। প্রধান দাবি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।
তিনি বলেন, গত মাসে সংবাদ সম্মেলন  বলেছিলাম, গায়েবী মামলা ১৫টি, গ্রেফতার ৫০ জনের মতো, হাজার হাজার কমীদের বাড়িতে অভিযান। সেই সময়ে জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার এমনকি নির্বাচন কমিশনকেও স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম, বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে, প্রি-ইলেকশন ওয়ার্ক করার জন্য বিএনপি অফিসগুলো খুলে দেয়া, পুলিশী ও গোয়েন্দা নজরদারী পত্যাহার করা এবং অর্থবহ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের সহায়তার দাবি জানিয়েছিলাম। এরপর কয়েকটা দিন বন্ধ ছিলো। কিন্তু আবারও শুরু হয়েছে ভয়াল রূপ, অমানবিক আচরণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং একটি নিপীড়নের ভয়াবহ চিত্র গত ২৬ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে। এই প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে বাচতে চায়। গত ২৬ অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত ৮৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগের ৪২ জন গ্রেফতার ছিলো তাদের সবাইকে এখনো পর্যন্ত মুক্ত করতে পারেনি। স্থানীয় আদালত থেকে জামিন পাওয়া যায় না, যে কারণে হাইকোর্ট পর্যন্ত যেতে হয়। এ জন্য এক মাস, দেড় মাস দুই মাস একজন কর্মীদের বিনা অপরাধে সাজানো-পাতানো গায়েবী মামলায় নিপীড়ন সহ্য করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আজ সকালে আটরার রফিকুল কেঁদে কেঁদে বলেছেন, তার বাড়িতে পুলিশ হামলা, পরিবারের সাথে দুর্ব্যবহার করেছে। তার শিশু কন্যার কান্না তিন ঘন্টায়ও থামেনি। সে পুলিশের অত্যাচারে ভয় পেয়েছে। মসজিদে যাওয়ার সময় গ্রেফতার, বাজারে যাওয়ার সময়, পিতা-মাতাকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় গ্রেফতার, শিশুকে কোচিং সেন্টার থেকে নিয়ে আসার সময়ে গ্রেফতরা করা হচ্ছে। মোড়ে মোড়ে পুলিশ-ডিবি এটি কেন ? আমাদের প্রশ্ন। 
টেলিভিশনে টকশোর এক বক্তার বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, সংসদে শূণ্য আসনে সংসদ নির্বাচন হয় দেখিছি। কিন্তু জীবিত সংসদ সদস্যের আসনে কিভাবে নির্বাচন হয়। শূণ্য না হওয়ার আসনে কিভাবে নির্বাচন হবে। 
সরকার ভোট ডাকাতির আরেকটি নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করছে। এই অত্যাচারী শাসকের অধীনে নির্বাচনে যাবো না। বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচনে যাবো না। তিনি বলেন, মাছের বাজারে গিয়ে কাজ করা কর্মীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হয়। হ্যান্ডলিং শ্রমিকদের গ্রেফতারের অভিযান চালানো হচ্ছে। পুলিশিং কমিটির নামে বিএনপি নেতাকর্মীদের দেখিয়ে দিয়ে বলা হচ্ছে এরা বিএনপি করে এদের গ্রেফতার করুন। খুলনায় মধ্যযুগীয় কায়দায় নিপীড়ন চলছে। এ অবস্থার অবসান চায়। বিএনপি অফিসের স্টাফ বড় মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে, পিয়নরা অফিসে আসতে ভয় পায়। কেন এই পরিস্থিতির সৃষ্টি। সংবাদ সম্মেলনে সকল নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা গায়েবী মামলা প্রত্যাহার, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানানো হয়। 
প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, মীর কায়সেদ আলী, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, শাহজালাল বাবলু, রেহানা আক্তার, স ম আব্দুর রহমান, ফখরুল আলম, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, শেখ আব্দুর রশিদ, আজিজুল হাসান দুলু, শেখ সাদী, ইকবাল হোসেন খোকন, মাসুদ পারভেজ বাবু, একরামুল হক হেলাল, শামসুজ্জামান চঞ্চল, নিয়াজ আহমেদ তুহিন, শফিকুল ইসলাম শাহিন, সরদার ইউনুস আলী, ইমতিয়াজ আলম বাবু, জিএম রফিকুল ইসলাম, আরিফুর রহমান, রোকেয়া ফারুক, বোরহান উদ্দিন সেতু, আনজিরা খাতুন, শাহনাজ পারভীন, মুন্নি জামান প্রমুখ। 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here

আজকের ভোরের ডাক পড়ুন এখানে