নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বন্ধ, অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদক্ষেপ গ্রহণ, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট ডাকাতিতে সহায়তাকারী প্রশাসনিক ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের নির্বাচনী তফশীল ঘোষণার আগে খুলনা থেকে অপসারণ এবং গণগ্রেফতার বন্ধের দাবি জানিয়েছে খুলনা মহানগন বিএনপি। শুক্রবার দুপুরে নগরীর কেডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর সভাপতি সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইভিএম মেলা উদ্বোধনের জন্য খুলনা আসছেন । দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা এবং আইটি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শকে তোয়াক্কা না করে ইভিএম নিয়ে মাতামাতি দুরভিসন্ধিমূলক। এছাড়া ইভিএমের ইতোমধ্যে আলোচিত সমস্যার সাথে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট নেয়া কালে কয়েকবার বন্ধ হওয়া, রাজশাহীতে একটি কেন্দ্রে মেশিন অকেজো হওয়ায় পরদিন ভোট গ্রহণ এবং গাজীপুরে এক কেন্দ্রে মেশিনের ত্রুটির জন্যে ভোট নিতে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার ঘটনা আমরা দেখেছি। তাই ভোটের ফলাফল প্রভাবিত করার ইভিএম ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। ২০১০ সালে প্রতিটি মাত্র ১০ হাজার টাকায় কেনা ইভিএম এবারে ২০গুণ বেশি দামে ক্রয় জনগণের অর্থ লোপাটে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অশুভ পার্টনারশিপ বলে দাবি করা হয়।
তিনি বলেন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ নগরীর সদর, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর, দৌলতপুর, খানাজাহান আলী, লবণচরা ও আড়ংঘাটা থানায় ১৫টি মামলায় ২৭২ জনের নাম দিয়ে এবং ১হাজার ৬৮২ জন অজ্ঞাতনামাসহ মোট ১হাজার ৯৫৪ জন নেতাকর্মীকে আসামী করে ‘গায়েব’ মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলায় পুলিশ ৩০ জনকে গ্রেফতার এবং একইসঙ্গে অজ্ঞাতনামা আসামি থাকার সুযোগে হয়রানি ও গ্রেফতার বাণিজ্য চালিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে বাড়ি ও এলাকা ছাড়া করেছে। নগরীর কোথাও বিএনপির নেতাকর্মীরা একত্রিত হওয়া তো দূরের কথা, তাদের স্বাভাবিক ব্যক্তিগত নাগরিক জীবন বিপর্যস্ত। দলীয় কার্যালয়সমূহ তালাবদ্ধ এবং কার্যালয়ের ফটকে পুলিশ পাহারা বসিয়ে রাখছে। ফলে আমাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এসব ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন নির্বিকার। তারা সরকারের ইচ্ছা পূরণে নিয়োজিত। তিনি সরকারের একতরফা নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন না করে দুরবস্থা অবসানে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সিভিল প্রশাসনের ব্যাপক অংশ সরকারি দলের প্রার্থীর পক্ষে নির্লজ্জভাবে ভোট ডাকাতিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে দাবি করে তিনি বলেন, প্রিজাইডিং অফিসারসহ অন্যান্য নির্বাচনী কর্মকর্তার বিপুল অংশ দলীয় কর্মীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। প্রশাসনের এসকল বিতর্কিত কর্মকর্তা, বিশেষ করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চিহ্নিত কর্মকর্তারা খুলনায় দায়িত্বে বহাল থাকলে নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচনের নূন্যতম সম্ভাবনা নেই। নির্বাচনের তফশীল ঘোষণার আগেই এসকল প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের খুলনা থেকে প্রত্যাহার একান্তভাবে প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশারফ হোসেন, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, এ্যাড. বজলুর রহমান, জলিল খান কালাম, এ্যাড. এস আর ফারুক, শাহজালাল বাবলু, রেহানা আক্তার, স ম আব্দুর রহমান, জাহিদুল ইসলাম, ফখরুল আলম, অ্যাডভোকেট ফজলে হালিম লিটন, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, মাহবুব কায়সার, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মেহেদী হাসান দীপু, মহিবুজ্জামান কচি, শফিকুল আলম তুহিন, আজিজুল হাসান দুলু, এ্যাড. গোলাম মাওলা, ইকবাল হোসেন খোকন, মাসুদ পারভেজ বাবু, কে এম হুমায়ুন কবির, হাসানুর রশিদ মিরাজ, শামসুজ্জামান চঞ্চল, মাহবুব হাসান পিয়ারু, কামরান হাসান, শরিফুল ইসলাম বাবু, হেলাল আহমেদ সুমন, নিয়াজ আহমেদ তুহিন, নাজিরউদ্দিন আহমেদ নান্নু, বদরুল আনাম খান, হাফিজুর রহমান মনি, জামিরুল ইসলাম, মীর কবির হোসেন, আফসারউদ্দিন মাস্টার, তরিকুল্লাহ খান, রবিউল ইসলাম রবি, আবু সাঈদ শেখ, জাহিদ কামাল টিটু, নাসির খান, ফরিদ আহমেদ মোল্লা, তৌহিদুল ইসলাম খোকন, মোস্তফা কামাল, বাচ্চু মীর, আব্দুল আলিম প্রমুখ।
No comments:
Post a Comment