ঢাকা অফিস : আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীর কাছে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আবার আসিব ফিরে, এই সংসদে। তিনি বলেন আপনারা আরেকটিবার নৌকায় ভোট দিন, আরেকটি বার দেশ সেবার সুযোগ দিন- ইনশাল্লাহ এই বাংলাদেশ আর পিছিয়ে থাকবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে অদম্য গতিতে, এই অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। সোমবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের সমাপনী বক্তব্যে অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
সমাপনী অধিবেশনে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। সমাপনী অধিবেশনে বিরোধী দলের নেতাও বক্তব্যে রাখেন। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী কবি সুকান্তের কবিতাটি উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, সুকান্তের ভাষায় বলব-
‘চলে যাব— তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি—
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গিকার।’
এরপর তিনি কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতা উদ্ধৃত করে বলেন, আবার আসিব ফিরে এই সংসদে।
এর আগে তিনি বলেন, দেশের অদম্য অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে। সারা দেশে যে উন্নয়নের ছোঁয়া বাংলাদেশ পেয়েছে, তাতে আমি বিশ্বাস করি- বাংলাদেশের মানুষ নিশ্চয় আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে। জনগণের কাছে আমার আবেদন, আমরা যে মেগা প্রজেক্ট (প্রকল্প) গ্রহণ করেছি, তা সমাপ্ত করার জন্য আমাদের আরো কিছু সময় প্রয়োজন। আর সেই সুযোগটি দিতে পারে একমাত্র দেশের জনগণ। আমি বিশ্বাস করি, দেশের মানুষ নিশ্চয়ই সেই সুযোগ আমাদের করে দেবেন। বাংলাদেশের মানুষ সেই সুযোগটি যদি দেয়, ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত করার যে কাজে আমরা হাত দিয়েছি, সেটা অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি কোনো যুদ্ধ-বিগ্রহ না হয়, এটাই হচ্ছে সংসদের শেষ অধিবেশন।
বিরোধী দলের দাবীর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে প্রাণচাঞ্চল্য ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় সেজন্য ব্যাংক, বিমা, বেসরকারি টেলিভিশনসহ সবকিছু বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। আমাদের তরুণ প্রজন্ম তাদের ভবিষ্যত কী হবে, জীবনমান কেমন হবে? কেমন বাংলাদেশ রেখে যেতে চাই, সেটাই একমাত্র চিন্তা। টানা ১০ বছরে আমাদের শাসনমালে তরুণ প্রজন্মের সুন্দর জীবন দিতে প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়েছি। আজকে আমরা নিজস্ব বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১৫ কোটি সিম ব্যবহার হচ্ছে। এতো সিম ব্যবহার পৃথিবীর কোন দেশে নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণ আমাদের ভোট দিয়েছে, আমরা তাদের মর্যাদা রক্ষা করেছি। ২০২১ সালের মধ্যে সুনির্দিষ্ট টার্গেট করেছি শুধুমাত্র আইসিটি খাত থেকেই ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করব। ইন্টারনেট ব্যবহারে বিশ্বব্যাংকের মধ্যে বাংলাদেশ হচ্ছে এখন দ্বিতীয়। ৬ লাখেরও বেশি দেশের তরুণ-তরুণী দেশে ঘরে বসেই আউটসোর্সিয়ের মাধ্যমে বিদেশ থেকে অর্থ উপার্জন করছে। মোবাইল ব্যাংকিংও যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মোবাইল ব্যাংকে প্রতিদিন এক হাজার কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে, এটাই হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। কোরবানির গরুও এখন অনলাইনে বিক্রি হয়। সাড়ে সাত হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব গড়ে তুলেছি। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে আইটি খাতে বিরাজ সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য। ২০২১ সাল নাগাদ ১ হাজার ১৮৭টি ই-সেবা চালু করা হবে। সাইবার ঝুঁকি থেকে দেশকে রক্ষায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করেছি। যারা শুধু ক্রাইম করবে তাদের ক্ষেত্রে ব্যবহার হবে, অন্যদের চিন্তা করার কোনো কারণ নেই।
No comments:
Post a Comment