Channel Atv

সময়ের সাথে এগিয়ে চলে সাহসের সাথে কথা বলে

আসুন নিজেকে বদলায়। প্রতিদিন একটি ভালো কাজ করি। সুন্দর জীবন ও সমাজ গড়ি। নতুন সকাল

Breaking

Saturday, December 1, 2018

বীর প্রতীক তারামন বিবি আর নেই

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রান্না করা, তাঁদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখা, পাকিস্তানি বাহিনীর খবর সংগ্রহ করা এবং সম্মুখযুদ্ধে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে লড়াই করেছিলেন তিনি। দুর্ধর্ষ সেই কিশোরীর অসীম সাহসিকতার জন্য বীর প্রতীক খেতাব দেওয়া হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর হাতে তা তুলে দিতে ২২ বছর লেগে যায়। নিভৃতে জীবন যাপন করা এই সাহসী নারীকে খুঁজে পেতেই কেটে গিয়েছিল এতটা সময়। সেই বীর প্রতীক তারামন বিবি (৬২) আর নেই। চলে গেছেন লোকচক্ষুর অন্তরালে।

অনেক দিন ধরে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলা সদরে নিজ বাসায় মারা যান তারামন বিবি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার বাদ জোহর জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। মৃত্যুর সময় তারামন বিবি স্বামী আবদুল মজিদ, ছেলে আবু তাহের, মেয়ে মাজেদা খাতুনসহ পরিবারের সদস্যদের রেখে গেছেন। তাঁর ছেলেমেয়ে দুজনই বিবাহিত।

কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাঠি ইউনিয়নের কাছারিপাড়ার শংকর মাধবপুর গ্রামে তারামন বিবির জন্ম। শংকর মাধবপুরে ১১ নম্বর সেক্টরে কিশোর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সরকার তারামন বিবিকে বীর প্রতীক খেতাব দেয়। কিন্তু এই মুক্তিযোদ্ধাকে খুঁজে বের করা সম্ভব হয় ১৯৯৫ সালে। ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর সরকারের পক্ষ থেকে তারামন বিবির হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত একটার দিকে তারামন বিবি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজিবপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন তাঁর বাড়িতে আসেন। রাত দেড়টার দিকে তিনি তারামন বিবিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। 

দেলোয়ার হোসেন জানান, তারামন বিবির ফুসফুসসংক্রান্ত জটিলতা থাকায় দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ছিল। এ ছাড়া সম্প্রতি তাঁর ডায়াবেটিস ও হার্টের সমস্যাও ধরা পড়ে।

তারামন বিবির মরদেহ এখন তাঁর বাসায় রাখা হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী থেকে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে আসেন। তাঁর মৃত্যুতে তাৎক্ষণিকভাবে শোক প্রকাশ করেছেন জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন, রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান, তারামন বিবিকে খুঁজে পেতে ভূমিকা পালনকারীদের অন্যতম অধ্যাপক আবদুর সবুর ফারুকী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবদুল হাই, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম টুকু, রাজিবপুরের সন্তান গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার প্রমুখ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here

আজকের ভোরের ডাক পড়ুন এখানে