গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: লক্ষীপূজা উপলক্ষে নৌকা বাইচে সরব হলো গোপালগঞ্জের মধুমতি নদীর বিলরুট ক্যানেল। কয়েক হাজার দর্শক শনিবার সন্ধ্যা অবধি উপভোগ করেন বাহারি এ নৌকা বাইচ।
গোপালগঞ্জের বৌলতলীতে লক্ষীপূজা উপলক্ষে শত বছরেরও অধিক সময় ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে নৌকা বাইচ। এ দিনটির অপেক্ষা করে থাকেন এলাকার মানুষ। উপভোগ করেন কাসার বাটিতে বাদ্যের তালে তালে মাল্লাদের গাওয়া জারি সারি আর বৈঠার সলাৎ সলাৎ শব্দ।
এ নৌকা বাইচে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, নড়াইল, বরিশাল জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের ২২টি সরেঙ্গা, সিপ, বাছারী নৌকা অংশ নেয়। বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ নৌকা বাইচ। গ্রাম বাংলার প্রাচীন কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও নিজস্বতা ধরে রাখতে এ নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়। যা দেখতে এসে প্রাণের সঞ্চার হয় হাজারোমানুষের।
নৌকা বাইচ শুরু হবার আগে থেকে বৌলতলী বাজার এলাকার নদীর দু’পাড়ে জড়ো হন কয়েক হাজার দর্শক। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সম্মিলিত স্রোতধারায় পরিণত হয় সম্প্রীতির এক মিলন উৎসবে। শুধু গোপালগঞ্জ জেলাই নয় এর আশ-পাশের জেলা বরিশাল, মাদারীপুর, পিরোজপুর, নড়াইল ও বাগেরহাট জেলার লোকজনও এ নৌকাবাইচ উপভোগ করছেন।
এ উপলক্ষে নদীর দু’পাড়ে বসে মেলা। মেলায় বসে মিষ্টি, মাটির খেলা, আসবাবপত্র, বাঁশ ও বেতের সরঞ্জাম, গহনার দোকান। মিষ্টিপান, জিলাপি, ঘটিগরম চানাচুর কিনতে কেউই ভুল করেননা। দূর দূরান্ত থেকে উপভোগ করতে আসা দর্শকেরা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নেন মেলা থেকে।
প্রতিযোগীতায় প্রথম হন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গোয়াল গ্রামের বিরেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের নৌকা। দ্বিতীয় হয়েছে একই উপজেলার কলিগ্রামের অসিত বাড়ৈর নৌকা ও তৃতীয় হয়েছে বরমপাল্টা গ্রামের মোহনবাঁশি পান্ডের নৌকা। এদেরকে ২১ইঞ্চি রঙ্গিণ টেলিভিশন ও অংশগ্রহণকারী সকল নৌকাকে সাদাকালো টেলিভিশন দেওয়া হয়েছে।
আয়োজক বাবুল আক্তার বাবলা বলেন, আমাদের মাঝ থেকে দেশীয় সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়েছে। আগামীতেও এ ঐতিহ্য ধরতে রাখার কথা জানালেন তিনি।
No comments:
Post a Comment