Channel Atv

সময়ের সাথে এগিয়ে চলে সাহসের সাথে কথা বলে

আসুন নিজেকে বদলায়। প্রতিদিন একটি ভালো কাজ করি। সুন্দর জীবন ও সমাজ গড়ি। নতুন সকাল

Breaking

Tuesday, October 30, 2018

প্রথমবারের মতো সূর্যের কাছে নভোযান

আন্তর্জাতিক  ডেস্ক : সূর্যের রহস্য ভেদের জন্য মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা চলতি বছরের আগস্ট মাসে উৎক্ষেপণ করে অত্যাধুনিক নভোযান ‘পার্কার সোলার প্রোব’। গতকাল সোমবার, এই নভোযানটি সূর্যের আরো কাছাকাছি পৌঁছেছে, অন্য কোনো নভোযান এর আগে সূর্যের এতটা কাছাকাছি পৌঁছাতে পারেনি।

১৯৭৬ সালে সূর্যের ২৭ মিলিয়ন মাইলের মধ্যে পৌঁছাতে পেরেছিল হেলিওস-২ নভোযান। গতকাল সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়ে সূর্যের ২৬.৬ মিলিয়ন মাইলের (৪৩ মিলিয়ন কিলোমিটার) মধ্যে পৌঁছেছে পার্কার সোলার প্রোব। আগামী সপ্তাহে এটি সূর্য পৃষ্ঠের ১৫ মিলিয়ন মাইলের (২৪ মিলিয়ন কিলোমিটার) মধ্যে গিয়ে পৌঁছাবে।

সূর্যের উদ্দেশ্যে পার্ক সোলার প্রোবকে সাত বছরের জন্য পাঠানো হয়েছে। অবিশ্বাস্য দ্রুতগতির এই নভোযানটি সাত বছরে ২৪ বার সূর্য চারদিকে প্রদক্ষিণ করে কাছাকাছি পৌঁছাবে। সূর্যের চারদিকে উজ্জ্বল আভাযুক্ত যে এলাকা, যেটি ‘করোনা’ নামে পরিচিত, সরাসরি সেখানে গিয়ে ঢুকবে এই নভোযান। সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণ করতে করতে বোঝার চেষ্টা করবে এই নক্ষত্রের আচরণ। শেষ প্রদক্ষিণে এটি সূর্যের মাত্র ৩.৪ মিলিয়ন মাইলের (৬ মিলিয়ন কিলোমিটার) মধ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।

আগস্টের ১২ তারিখে উৎক্ষেপণ করা এই নভোযানটি আরো একটি নতুন রেকর্ড গড়েছে। হেলিওস-২ এর প্রতি ঘণ্টায় ১৫৩,৪৫৪ মাইল (২৪৭,০০০ কিলোমিটার) গতি অতিক্রম করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ম্যারিল্যান্ডে অবস্থিত জন হপকিন্স অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্স ল্যাবরেটরি থেকে প্রকল্পটির পরিচালক অ্যান্ড্রি ড্রিজম্যান বলেন, ‘পার্কার সোলার প্রোব উৎক্ষেপণের মাত্র ৭৮ দিনের মধ্যে আমরা ইতিহাসে অন্য যেকোনো নভোযানের তুলনায় সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। এটি আমাদের দলের জন্য খুব গর্বের একটি দিন, যদিও আমরা অপেক্ষায় আছি ৩১ অক্টোবর দিনটির জন্য, এদিন থেকে সূর্যের আরো কাছাকাছি যাওয়া শুরু করবে নভোযানটি।’

১.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত ঐতিহাসিক অভিযানের এই নভোযানটির ক্যামেরা তোলায় পৃথিবীর আশ্চর্যজনক একটি ছবি ২৫ সেপ্টেম্বরে প্রকাশ করেছে নাসা। পৃথিবী থেকে ২৭ মিলিয়ন মাইল (৪৩ মিলিয়ন কিলোমিটার) দূর থেকে তোলা ওই ছবিতে পৃথিবীকে একটি উজ্জ্বল বৃত্তাকার স্থান হিসেবে দেখা গেছে, যাকে আমাদের গ্যালাক্সির কোণা জুড়ে হাজার হাজার তারা ঘিরে রেখেছে।

দ্য পার্কার সোলার প্রোব হচ্ছে, ‘সূর্য স্পর্শ’ করার অভিযান। কেননা এটিই প্রথম নভোযান, যা সূর্যের বাইরের স্তরে অর্থাৎ সূর্যের চারদিকের উজ্জ্বল আভাযুক্ত ‘করোনা’ এলাকায় প্রবেশ করবে। সূর্যপৃষ্ঠের তাপমাত্রা যেখানে ৬ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস, সেখানে করোনা এলাকার তাপমাত্রা ১০ লাখ বা তারও কিছু বেশি ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে সূর্য পৃষ্ঠে প্রবেশ করাটা সম্ভব হবে না কারণ সেখানে উত্তপ্ত কণার ঝাপটা বেশি।

সূর্য পৃষ্ঠ থেকে ৩.৮ মিলিয়ন (৬.১ মিলিয়ন কিলোমিটার) ওপরে থাকবে নভোযানটি- আগের যেকোনো নভোযানের তুলনায় ৭ গুণ বেশি কাছে। পার্কার সোলার প্রোবকে ভয়ঙ্কর উচ্চ তাপমাত্রা ও সৌর বিকিরণের মুখোমুখি হতে হবে এবং সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছাতে এটির গতি করতে হবে প্রতি ঘণ্টায় ৪৩০,০০০ মাইল (৭০০,০০০ কিলোমিটার)।

করোনা এলাকার ভয়ঙ্কর তাপমাত্রার হাত থেকে নভোযানটির ভেতরে থাকা যন্ত্রাংশগুলোকে বাঁচানোর জন্য এতে রয়েছে অত্যন্ত শক্তিশালী ‘হিট শিল্ড’। রয়েছে বিশেষ প্রযুক্তিতে বানানো স্বয়ংক্রিয় কুলিং সিস্টেমও। সৌর বায়ু পরিমাপ করার জন্য এতে রয়েছে সর্বাধুনিক যন্ত্রপাত্রি। এছাড়া এর বিস্ময়কর হুইসপার নামক যন্ত্রটি সৌর তরঙ্গের ছবি তুলতে সক্ষম।

সূর্য থেকে নির্গত রেডিয়েশন ভালোভাবে বুঝতে বিজ্ঞানীদের সহায়তা করবে এই অভিযান। কেননা সর্যের কিছু রেডিয়েশন পৃথিবীর চৌম্বক শক্তির ভারসাম্য বিঘ্নিত করে ফেলতে পারে। যার কারণে পৃথিবীর যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হতে পারে, মহাকাশে স্যাটেলাইটগুলো কক্ষচ্যুত হতে পারে, এমনকি বৈদ্যুতিক গ্রিড বিকল হয়ে যেতে পারে। তাই এ ধরনের বিপদ আগে থেকে জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা, যা পার্কার সোলার প্রোব জানাতে পারবে বলে প্রত্যাশা বিজ্ঞানীদের। (তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল)



No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here

আজকের ভোরের ডাক পড়ুন এখানে